পোষা প্রানীর শখ আপনাদের অনেকেরই আছে। আমারও ছিলো। তবে এখন আর নেই। নেই মানে একদমই নেই। মাথা থেকে ভূত নামানোর মতো করে নামিয়ে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছি। বেশী ভূমিকায় যাচ্ছি না। ঘটনা কি ঘটেছিলো সেটাই বলছি। সংগত কারণেই সঠিক নাম ব্যবহার করছিনা।
------------------------ ------------------------ ------------------------
সাল ১৯৯১, আমি তখন সবেমাত্র বিয়ে করেছি। চোখে রঙিন দুনিয়ায় স্বপ্ন। ছোটখাটো চাকুরী করি একটা অখ্যাত অডিট ফার্মে। আজিমপুরে দু ' কামরার একটা ছোট বাসা ভাড়া নিয়ে আমি আর আমার স্ত্রী তানিয়া সংসার সাজাতে ব্যাস্ত। বছর দু'একের ভেতরেই আমরা বাসা মোটামুটি ভালো ভাবেই সাজিয়ে ফেললাম। আমার বেতনও ততোদিনে কিছুটা বেড়েছে। আমি আর তানিয়া দু'জনেই ভীষণ বিড়াল পছন্দ করি। গ্রামে থাকতে আমার একটা বিড়াল ছিলো 'মিনি'। সারাদিন আমার পায়ের কাছে ঘুরঘুর করতো। আমার হঠাৎ মনে হলো একটা বিড়াল থাকলে মন্দ হয়না। তানিয়াও পছন্দ করে আর সারাদিন বাসায় একা থাকার চেয়ে বিড়াল নিয়ে সময়ও কাটাতে পারবে সে। তানিয়াকে বলতেই সানন্দে রাজী হয়ে গেলো।
এক ছুটির দিনে দ'জনে রিক্সায় চেপে বসলাম। গন্তব্য কাঁটাবন; উদ্দেশ্য বিড়াল ছানা ক্রয়! নীলক্ষেত মোড় পার হতেই আকাশ কালো করে মেঘ গুড়গুড় করতে লাগলো। রিক্সাওয়ালা বললো,
"স্যার আমার কাছে তো পলিথিন নাই। পানি জোরে নামলে ভিজ্যা যাইবেন তো"
আমরা দু'জন মুখ চাওয়াচাওয়ি করে তড়িৎ সিধান্ত নিয়ে সেখানেই রিক্সা থেকে নেমে একটা বইয়ের দোকানে দাঁড়ালাম। তানিয়া ঘোষণা দিলো যে সে ধবধবে সাদা না হলে বিড়াল নেবেনা। আমি বললাম,
"আগে দেখো কাটাবন পর্যন্ত যেতে পারি কি না! আকাশের যে অবস্থা, বৃষ্টি নামলে কয়েক ঘন্টার আগে থামবে না"
মিনিট দশেক দাঁড়িয়ে থাকার পরেও যখন বৃষ্টি হলোনা তখন আমরা হেঁটেই কাঁটাবনের দিকে রওনা দিলাম। চারিদিকে রাতের মতো অন্ধকার। রাস্তায় লোক চলাচল অনেকটা কমে এসেছে। একবার ভাবলাম বাসায় ফিরে যাই কিন্তু পরক্ষণেই তানিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে বিড়াল ছানা কিনেই বাসায় ফিরবো স্থির করলাম। প্রথম কয়েকটি দোকানে শুধু পাখি আর খরগোশ ছাড়া অন্যকিছু নেই। আমার কিঞ্চিৎ আশাভঙ্গ হলো; যদি না পাই! তবে তিন-চার দোকান পরেই পেয়ে গেলাম।
আমরা সেই দোকানে ঢোকা মাত্রই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। রাস্তায় লোক চলাচল একেবারেই কমে গেছে। দোকানী মধ্যবয়সী। বেশ গোলগাল দেখতে। সমাদর করে বসালেন। তানিয়াই কথা বললো। উনি ধবধবে সাদা বিড়ালছানা তার কাছে আছে বলে জানালেন। আমরা দাম মিটিয়ে বিড়ালছানা কিনে ফেললাম। সেটি আসলেই দেখতে ভীষণ সুন্দর ছিলো। চকচকে লোমশ আর নরম তুলতুলে শরীর। ততক্ষণে আবহাওয়া কিছুটা ভালো হয়ে গেছে। অন্ধকার ভাবটাও কেটে গেছে তাই আমরা একটা রিক্সায় উঠে পড়লাম।
তানিয়া তার বিড়ালছানা নিয়ে খুব ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। আর আমি আমার কাজ নিয়ে। ছানাটার নাম রাখা হলো কুইন। সে দেখতে আসলেও ছিলো তেমনই। দেখতে দেখতে ছয় মাস হয়ে গেলো। কুইন তখন পুর্নাঙ্গ নারী বিড়ালে পরিনত হয়েছে। আমরা দু'জন ছাড়া আর কোন মানুষের সংস্পর্শে সে আসেনি। এমনকি এই দীর্ঘ সময়ে একবারের জন্যেও বাড়ির বাইরে যায়নি। তবে একদিন দুপুরে, সেদিন ছিল শুক্রবার। তানিয়া দুপুরে রান্না করছিল। আমি সবেমাত্র নামাজ পড়ে বাসায় এসে রেস্ট নিচ্ছিলাম। হঠাৎ তানিয়ার ডাকে রান্নাঘরে গিয়ে দেখি আমাদের কুইন রান্নাঘরের জানালা দিয়ে বাইরে কিছু একটা দেখে খুব অসহিষ্ণু আচরন করছে। কাছে গেলেই আঁচড়ে দিতে আসছে আর মুখ দিয়ে কেমন যেনো গরগর আওয়াজ করছে। আমরা খুব অবাক হয়ে গেলাম। এমনটা কখনো হয়নি। এছাড়া সব রকমের ওষুধ আর ভ্যাক্সিন ওকে দেয়া হয়েছে। আমি বাসায় লোক আনিয়ে করিয়েছি ওসব। কিছুতেই বুঝতে পারলাম না তার ওমন আচরনের কারন।
সেদিন সকাল থেকেই মেঘলা আর টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। সেটা বেড়ে একেবারে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেল। আমি আর তানিয়া অবাক হয়ে দেখছি কুইন গরগর করতে করতে ধীরে ধীরে জানালার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ওর দৃষ্টি অনুসরন করে আমরা পাশের বাড়ির শূন্য সানসেট ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলাম না। আমি তানিয়াকে জানালা বন্ধ করতে বললাম কিন্তু সেটা করার আগেই আমাদের বিস্ময়াভিভূত চোখের সামনে দিয়েই কুইন বিদ্যুৎগতিতে জানালা বরাবর লাফ দিল। সে নিখুঁত এক্রোব্যাটিক ভঙ্গিতে সরু গ্রীল গলে সেই সানসেটের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। তার পর অদৃশ্য কিছুর সাথে ধস্তাধস্তির পর চোখের পলকে কোথায় যেনো চলে গেলো। বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি। আমরা ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। আমরা এই ঘটনাকে অবলা প্রানীর খেয়াল হিসেবেই নিলাম তবে কিছুটা ভয়ও যে পেয়েছিলাম তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
ওই বৃষ্টির ভেতরেই আমি কুইনকে খুঁজতে বেরোলাম। প্রায় ঘন্টাখানেক খুঁজেও পেলাম না। ফিরে এলাম খালি হাতে। সেদিন আমাদের আর কিছু খাওয়া হলোনা। কিছুতেই বুঝতে পারছিলামনা যে এই বৃষ্টির ভেতরে কেন কুইন এভাবে চলে গেলো। আর বিড়াল তো পানি পছন্দ করে না এড়িয়ে চলে! সন্ধ্যার পর আবার তুমুল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। আমরা আশা ছেড়েই দিলাম। সে রাতে আমরা ওই তুমুল ঝড়বৃষ্টির মাঝেও বাসার সবকটা জানালা খুলে ঘুমালাম; যদি কুইন ফিরে আসে তো যেদিক দিয়ে খুশী যেনো ঢুকতে পারে। এভাবে যখন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলো তখন আমরা কুইনের আশা ছেড়েই দিলাম। আমি আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলাম কিন্তু তানিয়া খুব মনমরা হয়ে গেলো।
কুইন চলে যাওয়ার ঠিক এগারো দিনের মাথায়, গভীর রাতে রুমের দরজায় আঁচড়ের শব্দ শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তানিয়াও দেখলাম উঠে পড়েছে। এ-শব্দ যে আমাদের খুব পরিচিত। এ-তো কুইনের দরজা আঁচড়ানোর আওয়াজ! প্রায় রাতেই সে আমাদের সাথে ঘুমাতে আসতো আর এভাবেই আওয়াজ করতো। দরজা খুলতেই দেখলাম কুইন দাঁড়িয়ে আছে। সে-রাতে আনন্দে আমরা ঘুমাতে পারলামনা। আমি পরদিন ছুটি নিয়ে বাসায় থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা সারাদিন কুইনকে নিয়েই কাটালাম কিন্তু ওর ভেতর কেমন যেনো কিছু পরিবর্তন টের পাচ্ছিলাম। ও আর আগের মতো ছিলোনা। মিষ্টি স্বরে মিউমিউ করে না ডেকে কেমন যেনো রুক্ষভাবে কিছুটা অন্যরকম শব্দ করছিলো সে। আমার পরিচিত একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসক ছিলেন, উনাকে ফোন করলাম বাড়িওয়ালার বাসা থেকে উনি কুইনকে দেখতে চাইলেন কিন্তু আমি আর তানিয়া অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাড়ির বাইরে নিতে পারলাম না। শেষে হাল ছেড়ে দিলাম। এভাবেই ওকে মেনে নিলাম আমরা। এর ঠিক একমাস পরে আমরা বুঝতে পারলাম কুইন আসলে প্রেগন্যান্ট! অনেকগুলো তুলতুলে বিড়াল ছানা দেখার আশায় আমাদের দিন কাটতে লাগলো। তবে ভেবেই পেলামনা কীভাবে কি হলো! কুইন তো কোনদিন অন্যকোন বিড়ালের সংস্পর্শে যায়নি!! আমরা ভেবেই নিলাম এই এগারো দিনের ভেতরেই যা হওয়ার তা হয়েছে।
মাস খানেকের ভেতরেই কুইন খাওয়াদাওয়া একেবারেই ছেড়ে দিলো। আমাদের কাছেই ঘেষতে চাইত না। একদিন খুব ভোরে আবার দরজায় আঁচড়ের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দরজা খুলতেই কুইন আদুরে গলায় মিউ মিউ করে আমার পায়ের সাথে গা ঘষতে লাগলো। সে আমাকে তার ঘুমের জায়গায় নিয়ে গেলো। ছোট্ট তুলতুলে দু'জোড়া ছানা দেখতে পেলাম। আমি খুশী হয়ে তানিয়াকে ঘুম থেকে উঠালাম। এবার কাছ থেকে বাচ্চাগুলোকে ভালো করে দেখলাম। রঙ গুলো কেমন অদ্ভুত টাইপের। কুইনের মতো সাদা নয় কোনটাই। আর সবকটার মাথা অনেক বড়! সারা ঘরে কেমন একটা কটু গন্ধ! কুইনকে দেখলাম একবারও বাচ্চাগুলোর দিকে যাচ্ছে না। তানিয়া একটাকে ধরতে যেতেই সেটা কুই করে একটা শব্দ করে ওর হাতে আঁচড়ে দিলো। তানিয়া আহ শব্দ করে হাত সরিয়ে আনলো। আমি দেখলাম হাতটা রীতিমতো কেটে রক্ত বের হচ্ছে! আমরা এবার ভীষণ অবাক হয়ে গেলাম।
এভাবে কয়েকটা দিন চলে গেলো। কুইনের মোটেও আগ্রহ ছিলোনা বাচ্চাগুলোর প্রতি। সে যেনো কেমন একটা ভয় পেতো সেগুলোকে। কয়েকদিন পরে দেখলাম বাচ্চাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি তানিয়াকে বললাম এতো বিড়াল তো বাসায় রাখা সম্ভব না। একটা রেখে বাকীগুলো কাঁটাবনে কোন একটা দোকানে দিয়ে আসি। তানিয়াও রাজী হয়ে গেলো। এদিকে বাচ্চাগুলো দ্রুত বড় হতে লাগলো। তাদের মাথা এতই বড় যে দেখলে ভয় লাগতো। আমি দুধ-রুটি, মাছ দিলেও সেগুলো ওরা খেতোনা। আমি ভেবেই পাইনা ওরা কী খেয়ে বেড়ে উঠছিল। কুইন ওগুলোর কাছেও যেতো না। ঘরের অন্য কোনায় গুটিসুটি মেরে পড়ে থাকতো। মাস খানের ভেতর বাচ্চাগুলো অনেক বড় হয়ে গেলো আর ওদের স্বভাব মোটেও পোষা প্রানীর মতো নয়। বরং ওরা কিছুটা হিংস্র স্বভাবের। কাছে গেলেই গরগর আওয়াজ করতো আর বিকট মুখভঙ্গি করতো। রাতের অন্ধকারে ওরা এমনভাবে তাকিয়ে থাকতো যে আমরা ভয় পেয়ে যেতাম।
একদিন প্রচন্ড বৃষ্টির রাতে আমরা বাইরে বৃষ্টির শব্দ শুনছিলাম আর বই পড়ছিলাম, হঠাৎ তানিয়ার চা খেতে ইচ্ছা হওয়ায় আমি চা বানিয়ে আনতে দরজা খুলে লাইট জ্বালাতেই রান্নাঘরের মেঝেতে রক্তের ধারা দেখতে পেলাম। আমার গা শিউরে উঠলো যখন রান্নাঘরের লাইট জ্বালালাম। সেই দৃশ্য আমি কোনদিন ভুলতে পারবোনা। পুরো মেঝে রক্তে মাখামাখি আর ওরা চারজন মিলে আমাদের কুইনকে কামড়ে কামড়ে ছিরে খুরে খাচ্ছে! আমি ভয়ে আতংকে চীৎকার করে উঠলাম। ঠিক তখনই ওই চার পিশাচ একসাথে আমার দিকে ঘুরে তাকায়। সে-কী ভয়ংকর তীব্র জিঘাংসাময় চাহুনি আমি বলে বোঝাতে পারবো না। তানিয়া দৌড়ে এসে এই দৃশ্য দেখে কেমন যেন গো গো করতে করতে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে! আমি দৌড়ে তানিয়াকে ধরতে যেতেই ওরা রান্নাঘরের খোলা জানালা দিয়ে তীরের বেগে বেরিয়ে যায়; ঠিক যেভাবে আমাদের কুইন গিয়েছিল! তবে ওরা আর ফিরে আসেনি।
সর্বনাশ যা হওয়ার তা আমাদেরই হয়েছিল। তানিয়া সেসময় প্রেগন্যান্ট ছিল। একদম আর্লি স্টেজ। ও নিজেও বুঝতে পারেনি। প্রচন্ড শক পায় ও; প্রেগন্যান্সিও আর সাস্টেইন করেনি। ও ভীষণ ট্রমার ভেতরে চলে যেতে থাকে। পরবর্তীতে তানিয়া আর কোনদিনই মা হতে পারেনি। প্রেগন্যান্ট হলেই ও সেই একই ট্রমার ভেতর চলে যেতো আর অনেক চেষ্টা করেও মিসক্যারেজ আটকানো যেতোনা। কয়েকবার চেষ্টা করে আমরা হাল ছেড়ে দেই। আজিমপুরের সেই বাসাটা আমি ছেড়ে দেই ওই ঘটনার বছরখানেক পরে। রান্নাঘরে তানিয়া মাঝেমধ্যেই ভয় পেতো। ওর নাকি শুধু মনে হতো পাশের বাড়ির সেই সানসেট থেকে কেউ ওর দিকে তাকিয়ে আছে। একটা ঠিকা বুয়া রেখেছিলাম; সেও একমাসের মাথায় কাজ ছেড়ে দিলো। একদিন রান্নাঘরে মুর্ছা গিয়েছিল। আমরা অনেক্ক্ষণ একটানা পানির ছিটা দিয়ে জ্ঞান ফিরলেই ভয়ার্ত চোখে সেই সানসেটের দিকে তাকিয়ে যা বললো তার সারমর্ম এই যে সে রান্না করতে করতে হঠাৎই কেমন একটা অদ্ভুত শব্দ হওয়াতে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকাতেই ওই সানসেটের উপর চোখ পড়ে যায় আর সে দেখে চারটি কি এক ভয়ংকর প্রানী ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে আর অদ্ভুত শব্দ করছে! এই দেখে সে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। এই চার প্রাণী যে আমাদের কুইনের হত্যাকারী সে পিশাচ এ ব্যাপারে আর কোন সন্দেহ নেই।
------------------------ ------------------------ ------------------------
আমাদের পরে যিনি বাসাটা ভাড়া নিয়েছিলেন উনিও কী যেন দেখে ভয় পেয়েছিলেন। উনিও ছেড়ে দেওয়ার পর বাসাটা অনেকদিন খালি পড়েছিল। পরবর্তীতে শুনেছিলাম সেই বাড়ির মালিক না-কি পাশের বাড়ির মালিককে অনুরোধ করে সেই সানসেটটা ভাঙ্গার ব্যাবস্থা করেছিলেন আর এর পরে আর সেখানে কেউ কিছু দেখেনি। আমি পরে আমার সেই পরিচিত ভেটেরিনারি চিকিৎসকের কাছে সবকিছু খুলে বলেছিলাম। উনি সবটা শুনে কিচ্ছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। তার পরে ধীরে ধীরে যা বললেন তা আমার কাছে শুধু ভীতিকর নয় বরং চরম আশংকার! উনি না-কি বেশ কয়েকবছর আগে ধানমন্ডির এক বাসাতে হুবহু আমাদের সাথে যা হয়েছে তাই ঘটতে দেখেছেন। এছাড়াও বেশকিছু প্রাণীর ভেতর উনি অস্বাভাবিক কিছু পরিবর্তন ঘটতে দেখেছেন। উনি এই কেসগুলো নিয়ে কাজ করছিলেন তবে আমি উনার সাথে দেখা করার মাসখানেক পরেই শাহবাগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় উনি মারা যান। জীবনের ব্যস্ততায় একসময় আমিও এসব ভুলে যাই। তবে জীবনে আর কোন পোষা প্রানীর কথা কল্পনাতেও আসেনি।
সমাপ্ত।
© bnbooks.blogspot.com