আমি দেখলাম আমার স্ত্রী নীরা যার চুল থেকে পায়ের কড়ে আঙুল অবধি ক'খানা তিল আছে চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি। সে এমুহূর্তে কি ভাবছে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে অনুভব করতে পারি তাকে আমি চিনতে পারছি না। কিছু একটা লুকিয়ে যাচ্ছে।সে ভান করছে সবকিছু স্বাভাবিক। রোজকার মত ঘুম থেকে উঠে চোখমুখে জল ছিটিয়ে রান্নাঘরে রুটি বেলছে, পেঁয়াজ কাটছে। দরজায় দাঁড়িয়ে দেখতে পেলাম ওর হাত কাঁপছে। চোখে আতঙ্কের ছাপ।
-নীরা,মেয়েটা কে?
-
-কোন মেয়েটা! পদ্ম!
-হু। পদ্ম না ছাই তা তুমিই ভালো জানো। ও কেন এখানে এসেছে?
-মা গ্রামের বাড়ি থেকে যোগাড় করে পাঠিয়েছেন। অনেকদিন বলে মাকে বলেছিলাম আমার একজন হেল্পিংহ্যান্ড হলে ভালো হয়।
-তাই বলে কদাকার চেহারার এই মেয়েটাকে। ওকে আমার একটুও পছন্দ হয় নাই। এক্ষুণি বিদায় করো।
-আহা! মেয়েটা এতদূর থেকে এসেছে। আজকের দিনটা থাকুক৷ কাল সকালে তুমি ওকে গিয়ে বাসে উঠিয়ে দিয়ে এসো।
নীরার প্রতি কখনই আমি বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতে পারি না। তবু আজ নীরার মায়ের কাণ্ডজ্ঞানহীনতা দেখে রাগ চরমে উঠল।কি করে একটা বিশ্রী চেহারার মেয়েকে এখানে পাঠায়। ফোন করব ভাবছিলাম কে যেন অসম্ভব মিষ্টি গলায় ডাকল,
-আপনে আম্মার উপর রাগ কইরেন না,আমি এখুনি চইলা যামু। আমি কালো দেইখা কেউ আমারে পছন্দ করে না। আমার আব্বা ছোটোবেলায় আমারে গলা টিপ্পা মাইরে ফেলতে চাইছিল।
ভীষণ পরিচিত কণ্ঠস্বর।মেয়েটির দিকে তাকালাম। ভীষণ কুদর্শনা মেয়েটি কথা বলছে মাথা নীচু করে, যেন ওর মুখ দেখতে না পাই।
-তুমি নীরাকে আগের থেকেই চিনো?
-হু। আমার নাম আছিল ইকুনি। আম্মা আমার নাম রাখছে পদ্ম।
-ও।
নাস্তার টেবিলে আবার নীরার মুখোমুখি হলাম।
-নীরা, সত্যি করে বলো তো মেয়েটা কে? ও তোমার এমন পেয়ারের মানুষ শখ করে নাম রেখেছ পদ্ম।
-তোমাকে কে বলল?
-পদ্মই বলল।
নীরা রুটি ছিঁড়ে মুখে দিল।
-ভাজিতে লবন বেশি দিয়ে ফেলেছ।
-নীরা, তুমি কাইন্ডলি আমাকে পদ্মর ঘটনা কি বলবে! আমি জাস্ট নিতে পারছি না।
নীরা বলতে লাগল,
-ওর বড় তিন বোন আছে। আইরিন, শিরিন ছোটটার নাম মনে নাই। জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি ওর মা আমাদের বাড়িতে কাজ করে আসছে। রোগাপাতলা মহিলা। কিছুদিন পরপরই অসুস্থ থাকে। ছোট অবস্থায় বুঝতাম না, দেখতাম পেট ফুলে উঠেছে। মা বলত মরিয়ম খালার বাচ্চা হবে। ওর বাবা পরের জমিতে কামলার কাজ করত, অলস পুরুষমানুষ একদিন কাজ করলে তিনদিন ঘরের বাহির হয় না। পুত্রের আশায় একটার পর একটা মেয়ের জন্ম দিচ্ছে। পদ্মের জন্মের পর ওই ব্যাটা ঘোষণা করল, মরিয়ম খালাকে তালাক দিবে। ওর গর্ভে পোলার বীজ নাই, নতুন বিয়ে করবে। আমি তখন সেভেনে পড়ি। মায়ের হাত ধরে মরিয়ম খালার বাড়ি গেলাম নতুন বাচ্চা দেখতে। খালার শারীরিক অবস্থাও তখন কাহিল। মুলির বেড়ার ছাউনি দিয়ে মাটির ঘর। বৃষ্টির দিন,ঘরের মেঝেতে মাটি খুঁড়ে কেঁচো বের হচ্ছে। এরমধ্যে ছেঁড়া খাতা বিছিয়ে তেল মাখিয়ে পদ্মকে শুইয়ে রেখেছে।
ওর বাবা মাকে বলল,
-দেখেন খালা, ঝিম কালা মাইয়া হইছে। আমার কপালই মন্দ, এই মাইয়ারে তো বিয়াই দিতে পারমু না।
তাকিয়ে দেখলাম কপালে বড় করে কালির টিপ আঁকা মায়াময় গোলগাল একটা মুখ আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। কালো মেয়ে কিন্তু কি ভীষণ মায়া!
-তামাশা করছ? ওই মেয়ের চেহারায় মায়া।
-আহা। ছোটোবেলায় ছিল।তারপর শোনো, আমি ওর নাম দিলাম পদ্ম। আমার কান্নাকাটিতে মা ওর দায়িত্ব নিতে বাধ্য হল। সারাদিন মরিয়ম খালা আমাদের বাড়িতে কাজ করে। আর বারান্দায় মাদুর পেতে পদ্মকে শুইয়ে রাখে। ও হাতপা ছুঁড়ে খেলে। আমায় দেখলে বু বু করে ডাক পারে। আমি ওর মায়ায় জড়িয়ে গেলাম। টিফিন খরচ বাঁচিয়ে খেলনা কিনে নিয়ে আসতাম ওর জন্যে। যদিও মা ব্যাপারটা একদম পছন্দ করত না। মায়ের বেশিদিন সহ্য করতে হয়ও নাই, গ্রাম ঘুরতে এসে এক আধাইংরেজ দম্পতি ওকে অ্যাডপ্ট নিয়ে যায়। উনারা নিঃসন্তান চাকরিসূত্রে কলকাতায় বাস করে। পদ্মকে ভিনদেশে পাঠাতে ওর বাবামায়ের কারোরই আপত্তি ছিল না। আর এরমধ্যে দুইবার ওর বাবা ওকে গলাটিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। প্রায় বছর দশেক পদ্মের কোনো খোঁজ ছিল না।ওর বাবা ততদিনে গত হয়েছেন, ওর মা অভাবের তাড়নায় বড় দুই মেয়ের কিশোরী অবস্থায় বিয়ে দিয়ে ফেলেছেন। তার ইকুনি নামের ছোট্ট একটা মেয়ে ছিল তাও বুঝি ভুলতে বসেছে তখন পদ্ম ফিরে এল। যশোরের একজন কাপড় ব্যবসায়ী যে কলকাতা থেকে কাপড় এনে সেল করে সে পদ্মকে নিয়ে এসেছে। জানা যায়, মাস তিনেক আগে আ্যাংলো ইন্ডিয়ান দম্পতি রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে।পদ্মকে দেখভালের কেউ নাই।ওর মা রোগোশোকে কাতর।পদ্মর ছোটোবোন আমাদের বাড়িতে এখন ফুটফরমাশ খাটে।কোনোমতে দিন চলে,ভাত যোগাড় হয় না। পদ্মর ফিরে আসার খবর শুনে আমিই মাকে ওকে ঢাকা পাঠাতে বললাম।
-বাহ।চমৎকার। তারমানে কিছুক্ষণ আগে তুমি আমাকে মিথ্যা বলছিলে! তাও তোমার মায়ের নামে!
-হু। সরি।
আধখাওয়া রুটি টেবিলে রেখেই উঠে দাঁড়ালাম।নীরা আমার মেজাজ গরম করে ফেলেছে। বাইরে যাবার জন্যে পা দিব কে যেন পিছন থেকে ডাকল। পদ্ম, মেয়েটা একঘণ্টা হয় নাই এবাড়িতে এসেছে কিন্তু খুব পরিচিত গলায়,
-আপনার ফোন রাইখা গেছেন।
ফোন নিয়ে তড়তড় করে সিড়ি দিয়ে নামছি কেন যেন এত মিষ্টি স্বরে কথা বলত। কে! কে!
ক্রিং ক্রিং করে ফোন প্যান্টের পকেটে ফোন বাজছে। মা নিয়মকরে সকাল দশটায় ফোন করে।
-মা,কেমন আছ?
-ভালো। তোরা কেমন আছিস? বউমার শরীর ভালো।
মায়ের কণ্ঠশুনে তড়াক করে মনে পরল,
-পদ্মর কণ্ঠ হুবুহু চৈতীর মত। চৈতী আমার পিঠাপিঠি চাচাতো বোন,খেলার সাথী। আট বছর বয়সে পুকুরে ডুবে মরে যায়।
-মা তোমার চৈতীর কথা মনে আছে?
-কোন চৈতী। সুমীর ননদ?
-আরে না। আজমল চাচার মেয়ে।
-ওইযে পানিতে ডুবে মারা গেছিল যে! ওর কথা কেন!
-কিছু না। তোমরা ভালো থাক।
পদ্ম স্থায়ীভাবে আমাদের বাসায় থাকতে শুরু করল।
নীরার সাথে টুকিটাকি কাজ করে। সকালের নাস্তা বানায়,ঘর ছাট দেয়। প্রথম দেখায় ওকে দেখে যতটা কুৎসিত লাগছিল পরে তেমনটা আর লাগে নাই। আসলে আমাদের চোখ সহজেই মানিয়ে নিতে শিখে যায়। দুজন থেকে আমাদের তিনজনের সংসারের বিশেষ কোনো পরিবর্তন ঘটল না। শুধু আমার কুঁড়ে বউ আটটার জায়গায় দশটা বাজে ঘুম থেকে উঠে। হেলতে দুলতে নাস্তা করে। গল্পগুজব করে। পদ্মর খাবারে অনীহা। কোনো প্রকার মাছ খায় না। মাংস হলে দুই একপিস খায় তাও শুধু মুরগির মাংস। বারো বছরের ওইটুকু মেয়ে কিন্তু বেশ করিৎকর্মা। বেড়ালের মত পা ফেলে নিঃশব্দে কাজ করে। খুব পরিষ্কার থাকার বাতিক। হয়ত বহুদিন বিদেশি পরিবারে বাস করার ফলে রুটিনমাফিক চুপচাপ থেকে কাজ করতে শিখে গেছে। অবাঙ্গালি পরিবারে থেকে আমাদের মত মাছপ্রীতিও নেই।
ও আসার এক সপ্তাহ পর একটা জিনিস লক্ষ্য করে অবাক হলাম,পদ্ম অন্ধকারে দেখতে পায়।
ইলেকট্রিসিটি নাই। নীরা বলল,
-পদ্ম,কয়েল জ্বালা।
ও অন্ধকারে ম্যাচ,কয়েল যোগাড় করে মোম জ্বালাল,কয়েল ধরাল। বাসায় নতুন এসেছে এখনও কোনাগলিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠে নি তবু হোঁচট পর্যন্ত খেল না,শব্দও না। নীরাকে বলাতে ও উড়িয়ে দিয়েছিল,
-তোমার যত্তসব বাজে কথা।
পদ্ম অন্ধকার ভালোবাসে। প্রায়ই দেখেছি অন্ধকারে গুণগুণ করে কথা বলে।
-কীরে,কার সাথে কথা বলিস?
-আব্বা, গান গাই।
যেই মেয়ের মুখে সারাদিন টু শব্দ হয় না সে অন্ধকারে গান গাইছে,কেমন উদ্ভট না!
আরেকটা ঘটনা বলি,একদিন দুপুরবেলা নীরা ফোন করে আদুরে গলায় বলল,
-তোমার জন্যে একটা সারপ্রাইজ আছে।
-কিহ?
-আহা! লাঞ্চের টেবিলে পাবে।
-ঢং। করো নাতো। নতুন কি রান্না করেছ?
-কাচ্চি বিরিয়ানি৷ পদ্মকে দিয়ে তোমার অফিসে পাঠিয়েছি।
-নীরা তুমি পাগল হয়ে গেছ। ও ঢাকা শহরের কোনো রাস্তাঘাট চেনে না। মিরপুর থেকে সেগুনবাগিচা চাট্টিখানি রাস্তা!
-নীরা থতমত খেয়ে বলল,
-ওতো,বলল ও পারবে।
-দুর।
মেয়েটাকে খুঁজতে বের হব দেখি টিফিনক্যারিয়ার হাতে হাজির। খটকা লাগল, ও বড় হয়েছে কলকাতায় তারপর গ্রামে। ও ঢাকা শহর চিনে ফেলল!
-তুমি একা এসেছ?
-জ্বী।
-দারোয়ানকে দিয়ে ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম। নীরার হাতে কাচ্চি গলা দিয়ে নামছে না, ভাবছিলাম পদ্ম কিছু একটা লুকিয়ে যাচ্ছে। ওইটুকু একা নেত্রকোণা থেকে ট্রেনে চেপে আমার বাসায় উঠে এসেছিল এখনও ঢাকার রাস্তায় একা চলাচল করেছে। ও কিছুএকটা লুকিয়ে যাচ্ছে। চুরিডাকাতির মতলবে বাড়িতে ঢোকা ওর লক্ষ্য হতে পারে।
বাড়ি ফিরে নীরাকে বলব পদ্মকে বিদায় করে দিতে কিন্তু বাড়ি ফিরে আরো বড় সারপ্রাইজ আমার জন্যে অপেক্ষা করছিল।নীরা প্রচণ্ড বমি করছে, ওর শরীরে জ্বর। ডাক্তার এসে ঘোষণা করল,
-ও কনসিভ করেছে।
ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। প্রচণ্ড খুশি হয়েছি।নীরার আমার বুকের ভেতর কাঠ হয়ে শুয়ে রইল। ও কাঁদছে।
-কি হয়েছে?
-আমার খুব ভয় করছে।
-কেন?
-বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে, কে যেন আমায় লক্ষ্য করছে।
-দুর বোকা।
দরজায় খটাখট শব্দ হল,পদ্ম দাঁড়িয়ে।
-আম্মা,আপনের ওষুধ।
পদ্ম, তোর আম্মারে যত্ন করিস। তোর আম্মার বাচ্চা হবে।
পদ্ম ঘাড় কাৎ করে হাসল।ওর হাসিতে এমন কিছু ছিল আমি দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হলাম।
নীরার শারীরিক অবস্থা পরিবর্তন হতে লাগল খুব দ্রুত। সারাক্ষণ মাথা ঘোরায়, গলায় চোরা ঢেকুরের অস্বস্তি। প্রায় রাতেই হাত দিয়ে দেখি ওর গায়ে জ্বর জ্বর ভাব। রাতে ঘুমের মাঝে আৎকে উঠে।
-আমি খুব বাজে স্বপ্নে দেখেছি।
-কি স্বপ্ন?
-দেখি আমার গর্ভে বেবির সাথে একটা সাপ বড় হচ্ছে।
-নীরা গর্ভবতী মহিলারা কমন সমস্যা দুঃস্বপ্ন দেখা।
-স্বপ্নের মধ্যে পদ্মকেও দেখলাম।ও হাত বাড়িয়ে সাপটা ধরতে চাইছে।
-নীরা, স্টপ ইট।তুমি কোনো কারণে পদ্মকে পছন্দ করছ না। ওকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিব?
-নাহ।
নীরা আৎকে উঠে। ওকে যেতে দিব না।
-আচ্ছা । তবে ঘুমাও।
দিন কাটছে। প্রথম সন্তান স্ত্রীর গর্ভে এলে বাবারা যেমন সুখী সুখী চেহারায় ঘুরে বেড়ায়,সন্তানের নাম ঠিক করে আমি তা পারছিলাম না। নীরার চোখের নীচে কালি,কোনোকিছুই খেতে পারছে না।
একদিন বাড়ি এসে দেখলাম পদ্মকে খুব বকাঝকা করছে।
-কি হয়েছে।
-দেখো,আমার নতুন কামিজ বারান্দায় রোদে দিয়েছিলাম এখন দেখি ছেঁড়া। ও বলছে,টান দিয়ে নিয়ে আসার সময় ছিঁড়ে গেছে।
দেখলাম সত্যি কামিজের ঠিক পেটের কাছে অনেকখানি ছেঁড়া। তবে তারকাঁটায় বেঁধে ছিঁড়েছে বলে মনে হচ্ছে না, কাঁচি দিয়ে ইচ্ছাকৃত কেটে ফেলা হয়েছে।
এইরকম প্রায়ই হতে লাগল। নীরার সালোয়ার,কামিজ প্রায়ই দেখতাম কাটা একেবারে পেটের কাছে।পদ্মকে প্রশ্ন করে সদুত্তর পেতাম না।
দুই মাস পর নীরাও কেমন অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করল।মাছ-মাংস যাই মুখে দেয় গন্ধ লাগে। এমনকি আমাকে পর্যন্ত বলল,
-আমি তোমার সাথে ঘুমাব না।
-কেন?
-তোমার গায়ে রসুনের গন্ধ।
মানে?
-হু। তুমি ডিভানে ঘুমাবে।
-আচ্ছা।
নীরাকে পদ্মকে নিয়ে বেডরুমে ঘুমাতে শুরু করল। আমি বসার ঘরে। মাঝরাতে ওদের ঘরে উঁকি দেই। নীরা হাতপা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে।মেঝেতে বিছানা পেতে পদ্ম ঘুমায়। ওর চোখ বন্ধ,নিশ্বাস উঠানামা করছে তবু কেন জানি মনে হয় ও ঘুমায় না।নিঃশব্দে অন্ধকারে আমাকে লক্ষ্য করে যাচ্ছে।
আমার আগে বাড়ি ফিরতে রাত হত। এখন সন্ধ্যা না গড়াতেই বাড়ি ফিরি।নীরাকে একা রাখতে ভয় হয়। রোববার প্রচুর কাজ থাকে, লাঞ্চ আওয়ারে পদ্ম ফোন দিল,
আব্বা, আম্মায় খুব কানতাছে।
-কি হয়েছে?
-জানি না। বলে হাতে খুব ব্যথা।
দ্রুত বাড়ি ফিরলাম। নীরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।ওর বা'হাত ফুলে ঢোল হয়ে গেছে।
-হাতের ভেতর কাটা কাটা কি যেন! আমি! আমি! সহ্য করতে পারছি না। উহু!
দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। ও ওটিতে নিয়ে যাওয়া হল। সার্জন ওর হাত খুঁচিয়ে যা বের করল দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম।আমার মত পুরো হসপিটালের লোকজনও ভীষণ অবাক।বাহুর মাংস
পেশীতে গেঁথে আছে কয়েকটা সোনামুখী সুঁই।
বিস্ফারিত কণ্ঠে বললাম,
-নীরা, এটা কিভাবে হল?
-আমি জানি না।সত্যি জানি না।
-চলবে
© bnbooks.blogspot.com