ভৌতিকগল্প - অদ্ভুত আংটি
পর্ব: ২
মিম বাসায় ফিরে ফ্রশ হয়ে নিল। ওর "অদ্ভুত আংটি" বইটা এখনো পুরোটা পড়া হয় নি। শেষের কিছু বাকি আছে। মিম বিকালে বইটা নিয়ে বসল। হঠাৎ বইএর পৃষ্ঠার একটা জায়গায় ওর চোখ আটকে গেল। ওই আংটিটার রং নীল। ওর স্বপ্নে দেখা সেই আংটিটাও তো নীল ছিল। তখন তো ও জানত না আংটিটা নীল তবে স্বপ্নে কিভাবে দেখল একটা নীল আংটি!
মিম কলেজে উঠেছে বেশ কয়েক দিন হয়ে গিয়েছে। এর মাঝে ওদের কলেজের বার্ষিক সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও শেষ। আর তুলি মেয়েটা ওকে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ভাবে সমস্যায় ফেলে। অনুষ্ঠানের সময়ও বেশ কয়টা ইভেন্টে মিম হরে গেছে ওর জন্য। তাও মিম ওকে কিছু বলে না। কিছুদিন হল তুলি মিমের পেছনে টাকা দিয়ে কতগুলো বখাটে লাগিয়ে দিয়েছে ওকে বিরক্ত করার জন্য। মিম তুলিকে অনেক বার বুঝিয়েছে। তুলি তবুও শোনে না।
আজ ওদের কলেজের বনভোজনের দিন ঠিক করেছে। এক সপ্তাহ পর ওরা বনভোজনে যাবে। জায়গা ঠিক হয়েছে কক্সবাজার ও সুন্দরবন। তিন দিনের সফরে যাবে। মিম খুবই এক্সাইটেড। অনেক জায়গায় ভ্রমণ করলেও কক্সবাজারটা এখনো ওর দেখা হয় নি। সেখানে সকালের সূর্যদয়ের দৃশ্য নাকি এতটা মনোরম যে বলার অপেক্ষা রাখে না।
দেখতে দেখতে সাত দিন কেটে গেল। আজ যাবে ওরা সফরে। কাল সারারাত মিমের ঘুম আসেনি আনন্দে আর প্লান করতে করতে। ভোর হতে না হতেই ও রেডি হয়ে পড়ে। এখান থেকে ওদের গাড়ি ছাড়বে সকাল আটটায়। ও সবকিছু গোছগাছ করে বেরিয়ে পড়ে কলেজের উদ্দেশ্যে। ওর আম্মু আর আব্বুও ওর সাথে কলেজ পর্যন্ত এসেছে। সাতটার ভেতর কলেজ প্রাঙ্গন লোকে লোকারণ্য।ছাত্র ছাত্রীদের পাশাপাশি অভিবাবক আর স্যার দের সাথে স্যারদের ফ্যামিলি সবাই এসেছে।
রান্না বান্নার জিনিসপত্র ৫ টা বাসের ছাদে নেওয়া হয়েছে। সব ঠিকঠাক করে ওদেরকে গাড়িতে তোলা হল। মিম ওর ফ্রেন্ডদের সাথে একই বাসে উঠল। মিতু ওদের বাসে উঠে নি। কিন্তু মিম দেখল মিতু অন্য বাসে ওঠার সময় মিমের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসল। মিম বেশ ভয় পেয়ে গেল এই মেয়ের এমন মুচকি হাসির মানে সে নিশ্চয় আবার কোনো অঘটন ঘটাতে চলেছে।
ওদের বাস ছাড়ল আটটায়। ওদের জেলা থেকে কক্সবাজার যেতে সময় লাগে প্রায় পাঁচ ঘন্টা। বাইরের দৃশ্য দেখছে মিম। বাসের ভেতর উচ্চ স্বরে গান বাজছে। সবাই মিলে নাচ গান হৈ চৈ। খুব রমরমা ভাব। এরই ভেতর ওদের গাড়ি শহর পেছনে ফেলে নদী পেরিয়ে বনের রাস্তা ধরে যাচ্ছে। চলতে চলতে একটার দিকে ওরা কক্সবাজারে পৌছলো। সন্ধ্যা বেলা সূর্যাস্ত দেখা আর পরদিন সকালে সূর্যদয় দেখা ওদের টার্গেট।
সেদান সারারাত ওরা আর ঘুমায় নি। গানবাজনা করেই কাটিয়েছে। মিমের মনে হচ্ছিল ওর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় পার করছে ও। পরদিন সকালে সূর্যদয় দেখে ওরা সুন্দরবন ভ্রমনে বের হল। সারাদিন সুন্দরবনের পিকনিক স্পটে ঘুরে ফিরে সন্ধ্যার দিকে বাসের কাছে জড়ো হল। রাতের খাবারের পর ওরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিবে।
রাতের খাবার খেয়ে সবাই বাসে উঠতে লাগল আর মিমের মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করতে লাগল। হঠাৎ সবকিছু অন্ধকার। সকালে ঘুম থেকে উঠে মিম নিজেকে আবিষ্কার করল একটা ঝোপের মধ্য। ও উঠে দাড়িয়ে দেখল চারিদিকে শুধু গাছ আর গাছ। তাছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
ও কাল রাতের কথা মনে করতে লাগল। ওরা তো রাতের খাবারের পর বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখন ওর মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করল। তবে ও এই বনের ভেতর কিভাবে এল। ও কিছুই ভেবে পেল না। এভাবে হাটতে হাটতে ও যেন কোন গোলক ধাঁধার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। এমন সময় ওর পায়ের কাছে কি যেন একটা বাধল।
পাতার ভেতর থেকে জিনিসটা উঠিয়ে দেখল একটা সুন্দর বাক্স। তাতে বেশ কাদামাটি জড়িয়ে আছে। মিম বেশ কৌতুহল বোধ করল। ও বাক্স টা খুলে দেখল তার ভেতর রয়েছে একটা সুন্দর আংটি। মিম অবাক হয়ে দেখল এটা সেই নীল পাথরের আংটি যেটা সে স্বপ্নে দেখেছিল।
মিম অবাক হয়ে কিছুখন দেখার পর আংটিটা যেই হাতে তুলে নিল ওমনি ওর গায়ে বেশ জোরে একটা ঝটকা লাগল। ও বেশ ভয় পেয়ে গেল। ও ভাবল এটা আবার সেই আংটিটা নয় তো যেটার কথা এম এ মুহিত তার বইএ বলেছিলেন।
মিম আবার ভয় ভয় করে আংটিটা স্পর্শ করল। এবার কিছুই হল না। মিম আংটিটা ওর আঙ্গুলে পরার সাথে সাথে ওর সারা শরীরটায় কেমন ঝটকা লাগল। ও নিজের ভেতর কেমন অন্যরকম ফিল করছিল।
এমন সময় ও কোনো কিছুর গর্জন শুনতে পেল। পেছনে তাকিয়ে দেখল একটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার ওর দিকে তাকিয়ে গর্জন করছে,,,,,,,,,,,
এমন সময় ও কোনো কিছুর গর্জন শুনতে পেল। পেছনে তাকিয়ে দেখল একটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার ওর দিকে তাকিয়ে গর্জন করছে।ও কি করবে বুঝতে পারল না। ভয়ে একদম পাথর হয়ে গিয়েছে। একদৃস্টিতে তাকিয়ে আছে বাঘটার দিকে। এমন সময় বাঘটা নিরবতা ভেঙে ঝাপিয়ে পড়ল ওর উপর। ঘটনার আকস্মিকতায় মিম দুই হাত সামনে নিয়ে মাটিতে বসে পড়ল চোখ বুজে। ও শেষবারের মত কালেমা পড়ে নিল। পুরো ফটনাটাই ঘটছিল স্লো মোশনে। হঠাৎ ও কোনো কিছুর ছিটকে পড়ার শব্দ পেল। চোখ খুলে দেখল। বাঘটা খানিক দূরে পড়ে রয়েছে। মিম লক্ষ করল ওর আংটিটা থেকে আলো ছড়াচ্ছে।আর ওর চারপাশে একটা স্বচ্ছ কাচের কত কোনো কিছুর গোলাকার আবরণ তৈরি হয়েছে।
ও হাত দুটো নিচে নামাতে নামাতে দেখল আবরণটাও অদৃশ্য হয়ে গেল। বাঘটাকে দূরে ওভাবে কাতরাতে দেখে মিমের ওর প্রতি বেশ মায়া হল। ও বাঘটার কাছে যেয়ে ওর গায়ে হাত বুলিয়ে দিল। এবার বাঘটা ওকে আর কিছু বলল না। কিছুখন পর বাঘটা একটু স্বাভাবিক হল। মিম সেখান থেকে অন্য দিকে হাটতে লাগল। আর আংটিটার কথা ভাবতে লাগল।
যেতে যেতে ও একটা ছোট নদী দেখতে পেল। একেবারে ছোট না। মিম অবাক হয়ে গেল। আরে এটা তো সেই নদী যেটা ও স্বপ্নে দেখেছিল। ও কিছুতেই বুঝতে পারছে না ওর স্বপ্নগুলো কিভাবে এরকম সত্যি হয়ে যাচ্ছে।
এদিতে মিমের কলেজর সব বন্ধু স্যারেরা ওকে খুজছে। কাল রাতে যখন নামেরর লিস্ট ধরে ডেকে ডেকে সবাইকে বাসে তুলছিল তখন মিমকে তারা খুজে পায় নি। তখন থেকে খুজতে খুজতে এই পর্যন্ত। কিন্তু তবুও মিমের কোনো পাত্তা নেই। মিমের বন্ধুরা সব ভীষণ চিন্তিত। কি হল যে ওর। এমনিতে এমন ঘন বন তার উপর কত হিংস্র বন্য প্রানী। ওর কিছু হয় নি তো।
এদিকে তুলি সবার সাথে তাল মিলিয়ে ওকে খুজছে আর কাল রাতের কথা ভাবছে। রাতের খাবারের সাথে অজ্ঞান হবার ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে মিমকে অজ্ঞান করে স্হানীয় এক লোককে টাকা দিয়ে মিমকে সুন্দরবনের গভীর অরন্যের ভেতর রেখে এসেছিল। এতখন বোধ হয় ওকে বন্য প্রানীতে ছিড়ে খেয়ে ফেলেছে। এটা ভাবতেই তুলির ঠোটের কোনে একটা মুচকি হাসির রেখা ফুটে উঠল।
এদিকে মিম সেই নদীর ধার দিয়ে হেটে চলেছে আর ভাবছে কি করে ও এখান থেকে বের হবে। হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে ও এক জায়গাতে বসে পড়ল। ও বুঝে গেছে এগুলো তুলিরই কাজ। ওর খুব কান্না পাচ্ছে ও ভাবল তবে কি আর কখনো ও বাসায় ফিরতে পারবে না। এমন সময় ও তুলির ওপর রাগ করে আর বন্ধুদের কাছে যাওয়ার ইচ্ছা পোশন করে জোরে চিৎকার করে বলল,"আমি তোদের কাছে যেতে চাই। " এরপর চোখ খুলে দেখল ওর আশে পাশে অনেক মানুষ। কাল রাতের সেই পিকনিক স্পট এটা। ও তখনকার মতো সেই স্বচ্ছ বেলুনের ভেতর। উঠে দাড়াতেই সেটা অদৃশ্য হয়ে গেল। ও দূরে ওর বন্ধুদের দেখল ওরা ওকে দেখে দৌড়ে আসছে।
সবাই ওর কাছে এসে হাজারটা প্রশ্ন। তুলি তো ওকে দেখে অবাক। ও কিছুতেই বুঝতে পারল না অমন জায়গায় রেখে আসার পরেও মিম পথ চিনে কি করে এল। ও সেই স্হানীয় লোকটার সাথে যোগাযোগ করল। সে তুলিকে বলল," আপনি কি বলছেন এসব। আমরা তাকে এই বনের সবথেকে ভয়ঙ্কর জায়গায় ফেলে এসেছি। সেখান থেকে বেচে ফেরা কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব না। তুলি রেগে বলল,তবে কি ও হাওয়ায় ভেসে এসেছে? লোকটা কোনো উত্তর দিল না।
তুলির প্লান ফেল হওয়ায় ও রেগে ফুসছে। এদিকে মিমকে সবাই ঘিরে ধরেছে। কোথায় ছিল, কিভাবে এল হাজারও প্রশ্ন। মিম এত কিছুর উত্তর কিভাবে দেবে। ওর মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি খেলল। ও অজ্ঞান হওয়ার ভান করল। সবাই প্রশ্ন থামিয়ে ওর রেস্টের ব্যাবস্হা করল। মিম মনে মনে ভাবল, "বাবা বাচলাম। "
এদিকে ওকে খুজে পাবার পর স্যারেরা সব ছেলেমেয়েদের গাড়িতে তুললেন। তারপর গাড়ি ছাড়ল বাড়ির উদ্দেশ্যে।মিম এখনো ভান করে আছে। কারন উঠলেই তো আবার প্রশ্নের বন্যা। তাই কি বলবে না বলবে তাই মনে মনে ভেবে নিল। এই আংটিটার কথা কাউকে বলা যাবে না।
এরপর জ্ঞান ফিরলে সবার প্রশ্নের উত্তরে বানানো কথাগুলো বলে দিল। যাই হোক সন্ধ্যার দিকে ওদের গাড়ি কলেজে পৌছালো। সেখানে সবার অভাবাবক ছিল। সবার অভিবাবক যার যার ছেলেমেয়েদের নিয়ে গেলো। মিমের আম্মু আব্বু দুজনই এসেছিলেন। মিম বাড়িতে পৌছে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ল।
কিছুখন পর ওর ফোনে একটা আননোন নম্বর থেকে কল এল।দুইবার ফোনে রিংটোন বাজার পর মিমের ঘুম ভাঙলো। ও ঘুমজড়ানো চোখে ফোনটা ধরে হ্যালো বলল। তখন অপর পাশ থেকে একটা অদ্ভুত কন্ঠ শুনতে পেল। মানুষ না যন্ত্র বুঝতে পারছে না মিম।
কন্ঠটা বলল,"আপনি এখনই আপনাদের ছাদে চলে আসুন।
মিম অবাক হল এত রাতে একটা লোক ফোন করে ওদেরই ছাদে আসতে বলছে। ব্যাপার কি।
ও লোকটাকে প্রশ্ন করল, "কেনো? কে আপনি?"
লোকটা বলল,"ছাদে আসুন সবই জানতে পারবেন। "
মিম আবার বলল,"আপনি কোথায়?"
লোকটা বলল," আপনাদের ছাদে।"
মিম তো পুরো অবাক এত রাতে আমাদের ছাদে! নিশ্চয় চোর ডাকাত হবে। আবার ভাবল চোর ডাকাতরা চুরি করতে এসে ফোন করে জানিয়ে দেয় এটা আবার কেমন কথা। ও ওর মা বাবাকে জাগাবে ভাবছে।
এমন সময় লোকটা বলল,"ঐ আংটিটা সম্পর্কে কথা আছে। তাড়াতাড়ি ছাদে আসুন। "
মিম এবার একটা শক খেল। এই আংটিটার কথা ঐ লোকটা কিভাবে জানল! আর জানলে ভালো। বাট আমার কাছেই যে ওটা আছে তাই বা কিভাবে বুঝল?...........
মিম এবার একটা শক খেল। এই আংটিটার কথা ঐ লোকটা কিভাবে জানল! আর জানলে ভালো। বাট আমার কাছেই যে ওটা আছে তাই বা কিভাবে বুঝল?
মিমের মাথায় নানা প্রশ্নের ঘুরপাক খাচ্ছে। ও এবার আস্তে আস্তে ছাদে গেল। গিয়ে সারা ছাদ তন্ন তন্ন করে খুজল কিন্তু কাউকেই দেখল না। ও ভাবল এই রাতে এভাবে কারো মজা করার মানে হয়? ওর মনে তবুও প্রশ্ন, তবে আংটির কথাটা,,,,,
তখন ও দেখল একটা আলোর ঝলক আকাশ থেকে ওদের ছাদের দিকে আসছে। ও দেখল আলোটা আস্তে আস্তে তীব্র হচ্ছে। ২৫ সেকেন্ডের মত সময় পর ও দেখল আলোটা একটা মাঝারি টাইপের যানে পরিনত হয়ে ওদের ছাদে ল্যান্ড করল।
মিম তো এরকম ঘটনা দেখে পুরাই অবাক। যানটা দেখতে না তো উড়োজাহাজ আর না তো গাড়ির মতো। এরকম যানবাহন মিম প্রথম দেখল।
কিছু সময় পর যানটির দরজা খুলে বেরিয়ে এল অদ্ভুত দুটো প্রানী। একটা মেয়ে আর একটা ছেলে। তাদের গায়ের রং সবুজ। উচ্চতায় একটা ৬ বছরের বাচ্চার সমান।কিন্তু দেখে বোঝা যাচ্ছে তারা মোটেও বাচ্চা না। প্রাপ্তবয়স্ক মুখের কাটিম। চেহেরাও মানুষের মতো না। কেমন অদ্ভুত মুখোচ্ছবি।মিম এমন দুটো প্রানী দেখে পুরো থ মেরে দাড়িয়ে আছে।
প্রানীদুটি মিমের কাছে এল।
এর মধ্য মেয়েটি মিমের কাছে এগিয়ে এসে বলল, "হাই আমি ইরিনা।
মিমও তাকে হাই বলল।
এবার ছেলেটি বলল," হাই আমি ক্রোকোম্যাক্স। আমরা দুজন তোমাদের পৃথিবী গ্রহ থেকে তিন আলোকবর্ষ দূরে টিউবিউল গ্রহ থেকে এসেছি। আমরা ভিনগ্রহের প্রানী। তোমাদের ভাষায় এলিএন।"
মিম তো এটা শুনে একেবারে অবাক। ও ভাবতেই পারছে না যে ও কোনো এলিয়েনের সাথে কথা বলছে।
এবার ইরিনা বলল," তোমার কাছে যে আংটিটা আছে সেটা কোনো সাধারণ আংটি নয়। অদ্ভুত ক্ষমতাসম্পন্ন আংটি ওটা।
মিম জিজ্ঞাসা করল, "আমার কাছে আংটিটা আছে এটা আপনাদেরকে কে বলল?"
ক্রোকোম্যাক্স বলল," ওই রকম আংটি মহাবিশ্বের খুব কম প্রানীর কাছেই আছে। তাছাড়া আংটিটা যেখানেই থাকুক না কেন আমাদের গ্রহ থেকে সিগন্যাল পাঠালে সে ঠিকই সাড়া দেবে। "
মিম বলল," আপনাদের গ্রহের আংটি পৃথিবীতে এল কিভাবে? "
ইরিনা বলল,"এটা আমাদের গ্রহের আংটি নয়।এই আংটি সম্পর্কে বলার জন্যই তো আমরা পৃথিবীতে তোমার কাছে এলাম।"
মিম বলল," বলুন তাহলে। "
ক্রোকোম্যাক্স বলল,"আমাদের টিউবিউল গ্রহে প্রতি বছর একটা অনুষ্ঠান হয়। যেখানে মহাবিশ্বের সকল প্রানের অস্তিত্ব সম্পন্ন গ্রহগুলো থেকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর শ্রেষ্ঠদের মনোনয়ন করে পুরষ্কার প্রদান করা হয়। এই পুরষ্কারের নাম 'জিনঝিনা'। অনেকটা তোমাদের পৃথিবীর নোবেল পুরষ্কারের মতো। পার্থক্যটা হল নোবেল দেওয়া হয় শুধু পৃথিবীর বাসিন্দাদের আর' জিনঝিনা' দেওয়া হয় পুরো মহাবিশ্ব জুড়ে।
মিম শুধু অবাক হয়ে ক্রোকোম্যাক্সের কথা শুনছিল।
এবার ইরিনা বলতে শুরু করল," এই জিনঝিনা পুরষ্কারেরও বিভিন্ন ক্যাটাগরি আছে। তার মধ্য একটি ক্যাটাগরি হচ্ছে ন্যায়পরায়নতা। আজ থেকে তিন বছর আগের অনুষ্ঠানে ন্যায়পরয়নতা ক্যাটাগরিতে জিনঝিনা পুরষ্কার প্রথমবারের মতো তোমাদের পৃথিবীর বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান এম এ মুহিত অর্জন করেন। তোমাদের দেশের সুন্দরবনের বাড়িটাতে তিনি ছিলেন তখন।
মিম বলল," হ্যা এম এ মুহিত স্যারকে তো আমি চিনি। অদ্ভুত আংটি বইটা তিনি লিখেছেন। তিনি তো আর এই দুনিয়াতেও নেই। মারা গেছেন কিনা তাও জানা জায় নি।"
এবার ক্রোকোম্যাক্স বলল," হ্যা তিনি মারা গেছেন। আর তিনি যে অদ্ভুত আংটি বইটা লিখেছিলেন তাও এই আংটিটা সম্পর্কে। "
এবার ইরিনা বলতে লাগল, "সুন্দরবনের বাড়িতে থাকা অবস্হায় অনুষ্ঠানের দুইদিন আগে আমরা তার বাড়িতে গিয়েছিলাম,,,,,,,,,,,,,চলবে.............।
© bnbooks.blogspot.com